গাড়ি রাস্তায় বের হতেই “স্যার
আপনি একা ঘুরতে যাচ্ছেন?”
“হ্যাঁ।” চোখ
সামনে রেখে গাড়ি চালাতে
হবে, এই উচ্ছল তরঙ্গিণীর
দিকে তাকালে এই
বৃষ্টিতে গাড়ি নিয়ে আমাকে
যমালয়ের পথ ধরতে হবে,
সেটা আমি চাইনা।
“আমার না খুব
ইচ্ছে করে বৃষ্টিতে লঙ
ড্রাইভে যেতে।” গলায় বেশ
উচ্ছাসের সুর।
চালানর ফাঁকে আড়
চোখে তাকাই মাঝে মাঝে ওর
দিকে। মাঝে মাঝে দু হাত
তুলে আড়ামড়া ভাংছে
দেসদিমনা, ছোটো হাঁটার টপ,
ভাঁজ হয়ে কুঁচকে গিয়ে বগল পর্যন্ত
দেখা যাচ্ছে, মসৃণ ত্বক,
ছিটেফোঁটা রোঁয়ার নাম গন্ধ
নেই। গা থেকে বেশ কেমন
একটা মন মাতানো গন্ধ বের হচ্ছে,
সাথে সাথে সারাদিনের
একটা ক্লান্তির আঘ্রাণ
মিশে সেই সুবাস আমার নাকের
ভেতর দিয়ে মাথায়
গিয়ে মাথার
ঘিলুটা নিয়ে লোফালুফি
খেলছে।
“তো বের হও না কেন?”
“কে নিয়ে যাবে আমাকে স্যার?”
আমার দিকে তাকিয়ে খিলখিল
করে হেসে বলল “আপনি?”
ভাবছিলাম বলে ফেলি, চল আমার
সাথে ঘুরতে বেশ মজা করব, কিন্তু
সেটা ঠিক বের হল না,
হয়তো আমার বয়স আর অফিসের পদ
আমাকে বাধা দিল “কেন, তোমার
বয়ফ্রেন্ড নিয়ে যাবে।”
বয়ফ্রেন্ড
নামটা শুনে দেসদিমনা যেন একটু
ক্ষুণ্ণ হল “না স্যার, আমার নেই।”
আমি তো প্রায় আকাশ
থেকে পড়ার মতন “কি বল তুমি, এত
সুন্দরী মেয়ের কোন বয়ফ্রেন্ড
নেই?”
হেসে বলে “না স্যার,
একা আছি অনেক ভালো আছি।”
তারপরে আমার
দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল
“আপনি ও
তো একা একা ঘুরতে যাচ্ছেন,
কোন সাথী না নিয়ে।”
বড় পুরানো ব্যাথার জায়গায়
ঘা দিল দেসদিমনা, উত্তর দেবার
ভাষা হারিয়ে ফেললাম আমি।
আমার সাথি আমার স্ত্রী, বড়
ভালবাসার পাত্রী, সুকন্যা, আমার
বুকের বাঁ দিক জুরে এখন ঘর
বেঁধে আছে। বাবা মায়ের
একমাত্র মেয়ে, ঠিক চোদ্দ বছর
আগে আমাকে হটাৎ একদিন
টাটা বাই বাই করে সেই
যে আমার কোলে ঘুমিয়ে পড়ল আর
জাগাতে পারলাম না আমি।
ডাক্তারের
দিকে চোখে আকুতি নিয়ে
তাকিয়ে ছিলাম, একবার
সুকন্যা কে ঘুম থেকে ভাঙ্গানর
জন্য, কিন্তু কেউ শোনেনি আমার
কথা। সবাই আমাকে বলল যে আমার
সুকন্যা নাকি আর নেই,
কি করে বিশ্বাস করি নেই, তার
আগের দিন রাত পর্যন্ত আমি ওর হাত
ধরে বসে ছিলাম হস্পিটালের
বিছানার পাশে।
আমাকে বলেছিল “সিগারেট
বেশি খেওনা, আমার বুকে বড়
ব্যাথা করে। আর স্নান করার
পরে ভালো করে মাথা মুছবে না
হলে তোমার সাইনাসের ধাত
আছে কখন আবার
সর্দি লেগে যাবে মাথা ব্যাথা
শুরু করবে।”
আমি ডাক্তারকে বলেছিলাম
যে আমার বাচ্চা চাইনা আমার
সুকন্যা কে ফিরিয়ে দিক। না,
কেউ আমার কথা শোনেনি,
না ডাক্তার না উপরওয়ালা।
বাচ্চাটা নাকি গলায়
নাড়ি জড়িয়ে ভ্রুনের
মধ্যে রাতেই মারা গেছিল,
ব্লাডারে প্লাসেন্টা বিষাক্ত
হয়ে গেছিল, কেউ বাঁচেনি।
অত্যধিক রক্তক্ষরণের
ফলে সুকন্যা অপারেশান
টেবিলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ
করেছিল। আমার সামনে শুধু তার
সাদা কাপড়ে ঢাকা পার্থিব
শরীর পরে ছিল। সুকন্যার
মাথা কোলে নিয়ে কান্নার
ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম
আমি।
আমি নিরুত্তর, এই
বেদনা কাউকে বলার নয়।
দেসদিমনা আমাকে জিজ্ঞেস
করল “কি হল স্যার, চুপ করে গেলেন
কেন? কিছু
উল্টো পাল্টা জিজ্ঞেস
করে ফেললাম নাকি আমি?”
চোখ দুটো জ্বালা করছে,
কাঁদতে পারিনা সর্বসমক্ষে “না
কিছু না।” বুক ভরে নিঃশ্বাস
নিয়ে সামনের
দিকে তাকিয়ে বললাম
“ছাড়ো ওসব পুরানো কথা, তোমার
কথা বল।”
“ঠিক আছে স্যার, মনে হল খুব
একটা ব্যাথার জায়গায়
নাড়া দিয়ে দিলাম আমি।
সরি স্যার।”
“দ্যাটস ওকে।”
“আপনি যেখানে যাচ্ছেন সেই
জায়গাটা কেমন?” সুরে একটু
কৌতূহল।
“দারুন জায়গা, তিন বার গেছি।
পাহাড় আমাকে ভীষণ
ভাবে টানে, আমার মনে হয় যেন
ওখানে থেকে যাই, কিন্তু
পাপী পেট, কাজকর্ম
না করলে খাবো কি।” হেসে উত্তর
দিলাম। কাল্কাজি এসে গেছে,
আমি গাড়ি ধিরে করে ওর
দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম
“তোমার বাড়ি কোনদিকে?”
মাথা নিচু করে হাতের আঙ্গুল
নিয়ে খেলা করছে দেসদিমনা,
আমার প্রশ্ন
শুনে মাথা না উঠিয়ে বলল “স্যার
এই বৃষ্টিতে আমার
ঘরে যেতে ইচ্ছে করছেনা, খুব
ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করছে।”
“বেশ তো, যখন তোমার কোন
বয়ফ্রেন্ড হবে তখন
সে নিয়ে যাবে তোমাকে।”
আমি হেসে উত্তর দিলাম।
দেসদিমনা নিরুত্তর,
আমি জিজ্ঞেস করলাম আবার
“তোমার বাড়ি কোনদিকে বল।
তোমাকে নামিয়ে দিয়ে
আমাকে বের হতে হবে।”
আমার দিকে তাকাল দেসদিমনা,
দু’চোখ কেমন যেন
ভাসাভাসা “আপনার
সাথে যেতে পারি, স্যার?”
আমি প্রথমে ঠিক
করে ধরতে পারিনি কি বলছে
মেয়েটা, আমি অবাক হয়ে ওর মুখের
দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম
“কি বলছ?”
“চলুন না স্যার, বেড়িয়ে পরি এই
বৃষ্টির রাতে।
যেখানে আপনি যাচ্ছেন,
সেখানে।”
“কি বলছ তুমি, সেটা একবার
ভেবে দেখেছ। তোমার বাড়ির
লোক কি ভাববে, আর আমি কেন
নিয়ে যাবো তোমাকে?”
“আমি তো এখানে মেসে থাকি,
একটা ফোন করেদিলে হল।
আপনি সাথে নিয়ে যাবেন
কিনা সেটা বলুন।”
এটা ঠিক কি রকম মেয়ের পাল্লায়
পরা গেল, অফিসের জুনিয়র কলিগ,
আমার চেয়ে বয়সে প্রায় বছর পনের
ছোটো মেয়েটা।
আমি হেসে বললাম “তোমার
মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
না বাড়ি যাও,
বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম কর সব কিছু
ঠিক হয়ে যাবে।”
আওয়াজ শুনে মনে হল যেন একটু
অভিমান হয়েছে দেসদিমনার
“ঠিক আছে স্যার,
আমাকে এখানে নামিয়ে দিন
আমি অটো নিয়ে বাড়ি চলে
যাবো।”
কি মুশকিলে পরা গেল
মেয়েটাকে নিয়ে, বৃষ্টি হয়েই
চলেছে তবে হাওয়া আর চলছেনা,
শুধু ঝিরঝির করে অঝর
ধারা ঝরে চলেছে কালো মেঘের
থেকে। আমি গলার স্বর যথেষ্ট নরম
করে বললাম “ইজ দেয়ার
এনি প্রবলেম?”
গাড়ি ধিরে ধিরে এগিয়ে
চলেছে, এই রকম ভাবে চললে আমার
যাওয়া হয়ে গেছে। গাড়ির
ভেতরে বসা এক রমণী যে আবার
একটু অভিমান করে বসে আছে।
কি করব কিছু ভেবে পাচ্ছি না।
আমার
দিকে না তাকিয়ে সামনের
দিকে চোখ রেখে বলল “ঐ সামনের
বাঁ দিকে টার্ন নেবেন,
চারটে ব্লক ছেড়ে আমার মেস।”
আমি একবারের জন্য ঘাড়
ঘুড়িয়ে দেখলাম দেসদিমনার
দিকে, জানালার
বাইরে তাকিয়ে গালে হাত
দিয়ে বসে। চেহারার
উদাসিনতা দেখে কিছু জিজ্ঞেস
করার সাহস পেলাম না। বাইরের
বৃষ্টির দিকে তাকিয়েই
আমাকে বলল “এই রকম এক বৃষ্টির
রাতে আমার ব্রেকআপ হয়েছিল,
তাই আমার মনটা কেমন করে উঠলো।
আপনার তো জেনে দরকার নেই,
আপনি আমাকে নামিয়ে দিয়ে
ঘুরতে যান।”
মেয়েটার মুখ দেখে আমার মনের
ভেতরটা হটাৎ করে কেমন উদাসিন
হয়ে গেল। বুকের
ভেতরটা আকুলি বিকুলি করে
উঠলো, এত
সুন্দরী একটি মেয়ে আমার ভ্রমন
সঙ্গিনী হবে, এটা ভেবে আমার
ভেতরে যেন একটা আগুন জ্বলে উঠল।
আমি দেসদিমনার
দিকে তাকিয়ে বললাম “ওকে,
একটা সর্তে নিয়ে যেতে পারি।
আমার কোন ব্যাক্তগত
ব্যাপারে তুমি হস্তক্ষেপ
করতে পারবে না।”
আমার কথা শুনে যেন
লাফিয়ে উঠলো দেসদিমনা,
হাসিতে যেন উতফুল্লর ছোঁয়া,
যেন অনেকদিন
পরে একটা বাঁধা তোতাপাখী
ছাড়া পেয়েছে “সত্যি আমাকে
নিয়ে যাবেন।”
আমি হেসে উত্তর দিলাম “হুম, যাও
তাড়াতাড়ি নিজের
জামা কাপড়
নিয়ে আসো আমি দাঁড়িয়ে আছি।
” গাড়ি ততক্ষণে ওর বাড়ির
নিচে এসে দাড় করিয়ে দিলাম।
“আপনি একটু দাঁড়ান
আমি এখুনি আসছি।” গাড়ির
দরজাটা কোনো রকমে খুলে আমার
দিকে যেন একটা মিষ্টি চুমু
ছোঁড়ার মতন মুখ করে দৌড়ে বাড়ির
ভেতরে ঢুকে গেল।
আমি ওর দৌড়ে যাওয়াটা পেছন
থেকে দেখতে থাকলাম, যেন উচ্ছল
এক হরিণী, কেমন চুলের গুচ্ছ আর
নিতম্বের লয়ে আমার চোখের
সামনে দিয়ে চলে গেল। আমার
বুকের মাঝে এক তুফান,
একা পেলে এই রমণীর
সাথে কি করব আমি,
নিজেকে সামলানোর দিকের
কোন প্রশ্ন ওঠেনা।
দেসদিমনা নিশ্চয় বোঝে যে যখন
এক নর আর নারী নিভৃতে ঘুরতে যায়
তখন সেখানে জৈবক্ষুধার আগুন
জ্বলে ওঠা কোন ব্যাপার নয়।
ভাবতে ভাবতে হেসে ফেললাম
আমি।
সুকন্যা চলে যাওয়ার পরে, গত চোদ্দ
বছরে সি.পি, সাউথ.এক্স, জি.কে,
কৈলাস কলোনি, নর্থ ক্যাম্পাস
থেকে কত মেয়েকে নিয়ে শুলাম,
নিজের জৈবক্ষুধার তাড়নায়,
ক্ষুধা মিটেছে বৈকি, কিন্তু মনের
তৃষ্ণা কেউ মেটাতে পারেনি।
কাউকে মনে ধরেনি বা ধরাতে
চেষ্টা করিনি, আমি। সূর্য
সকালে ওঠা মাত্র আমার রূপ
হয়ে যায় এক সিংহের মতন, গুরু
গম্ভির কেশর
ফুলিয়ে সারা অফিসে ঘুরে
বেড়াই, আর সূর্য পাটে বসার
পরে আমার চরিত্র হয়ে যায়
ক্ষুধাতুর হায়নার মতন,
গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াই
দিল্লীর নাইট ক্লাব আর পাবে,
কোন
নারীকে দেখে ভালো লাগলে
কাছে ডাকি,
বাড়ি নিয়ে বিছানায়
ফেলে ছিঁড়ে কুটে নিজের
ক্ষুধা নিবারন করি, সকাল
হলে একটা সাদা খাম ধরিয়ে দেই
সেই মেয়েটার হাতে, বলি “হ্যাভ
নাইস টাইম বেবি। গো হোম।”
স্টিয়ারিঙ্গের ওপরে মাথা নিচু
করে বসে আমি ভাবি আমার
সুকন্যার কথা। সুকন্যা যে এখন আমার
বুকের বাঁ দিক টায় ঘর বেঁধে আছে।
না, সুকন্যার সেই ভালবাসার কুঠির
আমি ভাঙ্গার
চেষ্টা করিনি কোনদিন। রোজ
সকালে আমাকে ঘুম
থেকে ডেকে তুলত, কানের
লতিতে আলতো করে কামর
দিয়ে জাগিয়ে তুলত।
মাঝে মাঝে খুব দুষ্টুমির
ইচ্ছে হলে আমার লিঙ্গ
টাকে মোচড় দিয়ে বলত “কিরে,
অনেক তো রাতে জ্বালালি আর
কত ঘুমবি তুই।” আমি যখন টুরে যেতাম
তখন রোজ সকালে আমাকে ফোন
করে সেই চুমু খাওয়ার আওয়াজ দিত
আর আমার ঘুম ভাঙ্গাত।
আমি ক্যাসেটে সেই আওয়াজ
রেকর্ড করে নিয়েছিলাম তাই আজ
সুকন্যা আমাকে ঘুম ভাঙ্গায়।
পরে আমি সেই আওয়াজ
মোবাইলে ঘুম ভাঙ্গার এলারম
হিসাবে সেট করে নেই। কোকিল
কন্ঠি সুকন্যা ডেকে ওঠে রোজ
সকালে “উমমমমমম… আর ঘুমোয়
না সোনা, উঠে পর। কি হল আবার
বালিশ নিয়ে ওদিকে মুখ
ফিরলে কেন? ওঠ না… ওঠ ওঠ ওঠ…”
“কি হল স্যার, শরীর খারাপ
করছে নাকি?” গলা শুনে আমার
সম্বিৎ ফিরে এলো।
দেসদিমনা কখন যে গাড়ির
দরজা খুলে ঢুকেছে আমার খেয়াল
নেই।
সুকন্যার
কথা ভাবতে ভাবতে আমার
চোখের পাতা একটু
ভিজে গেছিল,
সামলে নিয়ে হেসে বললাম
না “একটু ক্লান্তি লাগছে তাই
মাথা নিচু করে বসেছিলাম
আমি।”
“আমি গাড়ি চালাব স্যার?”
জিজ্ঞেস করল দেসদিমনা।
মেয়েটা দেখি একদম ঘুরতে যাবার
উপযুক্ত পোশাক পরে এসেছে,
দেখে তো আমার সিংহ
বাবাজি নড়েচড়ে উঠলো। ব্রাউন
রঙের বারমুডা শর্টস আর হাত
কাটা গেঞ্জি,
কাঁধে ছোটো একটা ব্যাগ, ওর
মধ্যে মনে হয় ওর জামা কাপড়।
ভরাট বুক দুটি চোখের সামনে যেমন
ভাবে নড়ছে এই যেন ধরে একটু
খানি আদর করে দেই।
আমি একটু অপ্রস্তুত হয়ে জিজ্ঞেস
করলাম “তুমি গাড়ি চালাবে?
তুমি চালাতে জানো, ডি.এল
আছে?”
“হ্যাঁ স্যার, খুব
ভালো ভাবে জানি। আপনি বসুন
আমি চালাচ্ছি।”
“ওকে,” আমি নেমে গেলাম,
গাড়ি থেকে না বেরিয়েই,
সিটের ওপর দিয়ে ড্রাইভার
সিটে বসে পড়লো দেসদিমনা।
বৃষ্টি একটু খানি ধরে এসেছে,
ঘড়ি দেখলাম প্রায় ন’টা বাজে,
এবারে যাত্রা শুরু করা উচিৎ। রাত
ন’টা তায় আবার বৃষ্টির রাত,
রাস্তা ঘাট ফাঁকা হয়ে গেছে।
হাইওয়ে ধরতে বিশেষ বেগ
পেতে হলনা। দেসদিমনার
গাড়ি চালানর হাত বেশ পাকা,
হাইওয়ে ধরতেই গাড়ির কাঁটা ষাট
পেড়িয়ে গেল।
রাস্তা জলে ভেজা আমি ওকে
বেশি স্পিড নিতে বারণ করলাম।
খিল খিল করে হেসে উত্তর দিল
“কেন স্যার, মরার ভয় আছে নাকি?
আমার তো আজকে মনে হচ্ছে যেন
পিঠে পাখা গজিয়েছে।
গাড়ি নিয়ে উড়ে যেতে ইচ্ছে
করছে খুব। মেনি থাকন্স স্যার,
আমাকে সাথে নেবার জন্য।”
“কাম অন দেসদিমনা,
গাড়ি আসতে চালাও, রাস্তায়
ট্রাক আছে আর গাড়ি আছে।”
আসে পাশের গাড়ির চালক
একটা মেয়েকে পাজেরও
চালাতে দেখে একটু থমকে গেল
মনে হল,
যে ভাবে গাড়ি ছোটাচ্ছে
দেসদিমনা মনে হল কিছু
একটা করে বসবে।
ঠোঁটে লেগে আছে এক অদ্ভুত খুশীর
হাসি, যেন ছোট্ট
একটি বাচ্চা মেয়ে খুঁজে
পেয়েছে তার অনেকদিনের
হারানো খেলার পুতুল। বৃষ্টি নেই
অনেকক্ষণ, গাড়ি বেশ
জোরে দৌড়াতে শুরু করেছে।
রাস্তা অন্ধকার,
ঠাণ্ডা হাওয়া কেটে হুহু
করে ধেয়ে চলেছে গাড়ি।
আমি আমার সিটটা পেছন
দিকে হেলিয়ে দিয়ে বেশ আরাম
করে বসলাম। মেয়েটা বেশ দারুন
গাড়ি চালাচ্ছে।
আমি মাঝে মাঝে ওর
দিকে তাকাচ্ছি, এক হাত
গিয়ারে এক হাতে স্টিয়ারিং,
বেশ পোক্ত গাড়ির চালক
মনে হচ্ছে।
আমি হেসে জিজ্ঞেস করলাম
“অফিস জয়েন করার
আগে কি ট্যাক্সি ড্রাইভার
ছিলে?”
কথা শুনে হাসিতে ফেটে পড়ল,
হাসার সাথে বুকের বৃহৎ কুঁচ যুগল
কেঁপে উঠলো। আমার
দৃষ্টি আটকে গেল
কেঁপে ওঠা ভরাট বুকের ওপরে।
আমার দিকে না তাকিয়েই উত্তর
দিল “শিলঙের মেয়ে আমি, ঐ
পাহাড়ে অনেক জিপ
চালিয়েছি।”
শিলং নামটা শুনে ধুক
করে উঠলো আমার বুক, সুকন্যার
মামার বাড়ি শিলং বিয়ের
পরে একবার গেছিলাম তাও অনেক
আগে।
আমি দেসদিমনা কে হেসে বললাম
“বাপ
রে তাহলে কি মুন্সিয়ারি পর্যন্ত
তুমি টেনে নিয়ে যাবে?”
আমার দিকে চোখ টিপে উত্তর
দিল “উপযুক্ত পারিশ্রমিক
পেলে নিয়ে যেতে পারি।”
আমি অনেক ক্ষণ ধরে ভাবছিলাম
একটা কথা জিজ্ঞেস করব
দেসদিমনা কে যে ওর হটাৎ
করে আমার সাথে ঘুরতে যাবার শখ
কেন জাগল
“আচ্ছা একটা কথা বলবে আমাকে,
তোমার ভয় করল না আমার
সাথে যেতে?
আমি একা তুমি একা, কিছু
একটা বেয়াদপি হয়ে গেলে?”
“কেন স্যার, আপনার কি ভয়
লাগছে আমার সাথে যেতে।”
হেসে উত্তর দিল তারপরে বলল
“স্যার আমরা দুজনেই প্রাপ্ত বয়স্ক,
আশা করি নিজেদের
প্রতি অতটা নিয়ন্ত্রণ
রাখতে পারব।”
মনে মনে ভাবলাম, বাছাধন আমার
রাতের রূপ তো দেখনি আমি কত
নিচ আর হীন। প্রায় রাতে আমার
বিছানায় এক নতুন মেয়ে চাই যার
সাথে শরীর ভরে সঙ্গম করি আমি।
নিজেকে সংযত রেখে বললাম
“আমার যদি না থাকে?”
খিল খিল করে হেসে উত্তর দিল
দেসদিমনা “কি যে বলেন স্যার।
আমি এইচ.আর, লোক চিনি।
আপনি অফিসে বরাবর খুব গম্ভির
থাকেন, কারুর সাথে দরকার
ছাড়া কথা বলেন না। আপনার
চেয়ে সেফ পুরুষ কে আছে?”
হাসি থামিয়ে কিছু
পরে জিজ্ঞেস করল “স্যার
একটা ব্যাক্তিগত প্রশ্ন
করতে পারি?”
একটু গম্ভির গলায় বললাম
আমি “না দেসদিমনা, আমার সর্ত
ছিল যে তুমি আমার কোন
ব্যাক্তিগত ব্যাপারে হস্তক্ষেপ
করবে না।” আমার একদম ইচ্ছে নেই
কেউ আমাকে আমার সুকন্যার
ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন করুক আর সেই
শুনে আহা উঁহু করুক, আমার সুকন্যা এখন
বেঁচে আছে।
“ওকে স্যার, সরি। আচ্ছা আমার
কিন্তু খুব খিদে পেয়েছে।”
দেসদিমনা আমাকে বলল “রাত
অনেক বেড়ে গেছে, আপনার
তো আবার একটু ব্লাড সুগার আছে,
বেশি ক্ষণ
খালি পেটে থাকলে তো শরীর
খারাপ করবে।”
আমি তো ওর কথা শুনে চক্ষু চরক গাছ,
আমার নাড়ির খবরাখবর এত
কি করে জানে “তোমাকে কে
বলল যে আমার ব্লাড সুগার আছে?”
ভুরু নাচিয়ে বলল “কেন স্যার, লাস্ট
টাইম যখন মেডিকেল ইন্সিওরেন্স
করা হয় তখন সবার মেডিকেল
হিস্ট্রি নেওয়া হয়েছিল, সেখান
থেকে আমি জানি।”
কথা শুনে মনে হল,
হ্যাঁ যে ডিপার্টমেন্টে আছে ও
সেখানে সবার নাড়ির খবরাখবর
রাখতে হয়। আমি বললাম “কিছু দুর
গেলে, গড়গঙ্গা পাবে তার
আগে কিছু
ধাবা আছে সেখানে আমরা
খেয়ে নেব।”
কিছুক্ষণ যাওয়ার পরে দেখলাম
ধাবা, আমি গাড়ি দাঁড়
করাতে বললাম ওকে।
দেসদিমনা অনায়াসে বেড়িয়ে
পড়ল গাড়ি থেকে,
পরনে বারমুডা আর হাত
কাটা গেঞ্জি। দেখতে বেশ
গোলগাল সুন্দরী,
মনে মনে হেসে ফেললাম এই
ভেবে যে যাচ্ছ আমার মতন
একটা বেয়াদব মানুষের সাথে,
তোমাকে না চটকে তো আমি
খালি হাতে ফিরব না।
ওকে দেখে ভাবলাম যে, আমিও
ড্রেস চেঞ্জ করে নেই, ফরমাল
ড্রেস পরে কি আর
ঘুরতে যাওয়া যায়। ব্যাগের
থেকে ট্রাক প্যান্ট আর টিশার্ট
বের করে চেঞ্জ করে নিলাম।
আমাকে দেখে বলল
“বাঃবা স্যার, এই
বয়সে তো ভালো মেন্টেন
করেছেন নিজেকে? বাঙ্গালির
ভুঁড়ি থাকে সেটা তো আপনার
নেই।”
“এই ব্লাড সুগারের জন্য রোজ
সকালে উঠি আর মর্নিং ওয়াক।” ওর
পাশে এসে দাঁড়িয়ে ওকে
জিজ্ঞেস করলাম “কি খাবে এত
রাতে?”
“আমি তো শুধু
একটা তন্দুরি রুটি চিনি দিয়ে
খাবো। এত রাতে বেশি তেল
মশলা খেলে গ্যাস হয়ে যাবে,
আপনি খেয়ে।”
“স্বল্পা আহার, এযে দেখি পাখীর
আহার খাও।”
গলায় কেমন আবেশ মিশিয়ে বলল
দেসদিমনা “বাঃ রে মোটা হয়ে
যাচ্ছি যে?”
“তোমাকে দেখে কে বলে মোটা
? তুমি একদম পারফেক্ট টেন।”
খিল খিল করে হেসে বলল
“বাঃ স্যার,
ফ্লারটিং হচ্ছে আমার সাথে?”
হাসির চোটে আবার
দুলে উঠলো ভরাট বুক,
ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম,
হাত কাটা গেঞ্জিটা বেশ
নিচে নামান তাতে বুকের
মাঝের
উপত্যকা ভালো ভাবে বোঝা
যাচ্ছে। আমি একটু যেন লজ্জায়
পরে গেলাম, পায়ের
মাঝে সিংহ বাবাজীবন জানান
দিয়ে দিল “আমি আছি”
খাওয়ার সময়ে দেখলাম যে উত্তর
আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, আমাদের
যেতে হবে উত্তর দিকে,
আমি দেসদিমনাকে বললাম
তাড়াতাড়ি খেতে, আমাদের
তাড়াতাড়ি বের হতে হবে।
খেলাম তো পাখীর খাবার,
আমি একটা কোক কিনলাম ওর
জন্যে আর আমার জন্য একটা লিমকা,
একটু ভদকা মিশিয়ে নেব তার
সাথে। খাওয়ার
পরে দেসদিমনা রেস্টরুমে গেল,
ততক্ষণে আমি আমার লিমকায়
ভদকা মিশিয়ে নিয়ে খেতে শুরু
করলাম।
এবারে আমি গাড়ি চালাব
ভেবে রেখেছি, মেয়েটা প্রায়
তিন
ঘন্টা ধরে গাড়ি চালিয়েছে।
দেসদিমনা কিছু
পরে ফিরে এসে দেখে আমি
ড্রাইভার সিটে বসে, আমার
দিকের দরজা খুলে আমার টিশার্ট
ধরে এক প্রকার জোর করে বলল
“এটা কি হল স্যার,
আমি গাড়ি চালাব।”
আমি বললাম “আর কত চালাবে,
এরপরে আমি চালাই তুমি রেস্ট
নাও।”
টানাটানিতে আমি নিচে নেমে
এলাম আর সোজা ওর
সাথে ধাক্কা। আমার প্রসস্থ বুকের
ওপরে ওর কোমল বুক পিষে গেল,
মনে হল যেন দুটি মখনের দলা বুকের
ওপরে থেতলে গেল, এত নরম বক্ষ।
রমণীর পরশ তো নতুন নয় আমার
শরীরে কিন্তু দেসদিমনার কোমল
কুঁচের ছোঁয়া আমার মেরুদন্ডের
মাঝে এক তড়িৎ প্রবাহের সৃজন করল।
আমি ঝট
করে নিজেকে সামলে সরে
দাঁড়ালাম।
আধো আলোতে দেখলাম
দেসদিমনার মুখখানি একটু লাল
হয়ে উঠেছে। আমার
দিকে না তাকিয়েই পাশ
কাটিয়ে ড্রাইভার
সিটে বসে পড়ল।
“বসে পড়ুন, ওটা আবার
কি গিলছেন?” ভদকার গন্ধ মনে হয়
পেয়েছে দেসদিমনা।
প্রায় অর্ধেক বোতল ছিল বাকি,
আমি বললাম “এই একটু
খানি বাকি তারপরে যাচ্ছি।”
0 Comments